ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ মেঘনার বুকে জেগে উঠা এক সময়ের অবহেলিত জনপদ চরসোনারামপুরে জীবন যাত্রার মানে উন্নতি ছোঁয়া লাগলেও ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ায় তেমন ঝোঁক নেই তাদের। তাই চরে অবস্থিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শতভাগ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে উদ্যোগ গ্রহন করেছে আশুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে চরসোনারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেড়শতাধিক শিক্ষার্থীর মাঝে টিফিন বক্স বিতরণের মাধ্যমে মিড-ডে মিল উদ্বোধন করা হয়। প্রথম দিনে টিফিন বক্সে মিড-ডে মিল হিসেবে দেয়া হয় সুস্বাদু খিচুড়ি। নতুন টিফিন বক্সে খিচুড়ির সুঘ্রাণে মোহিত হয় চরের দেড় শতাধিক ক্ষুদে শিক্ষার্থী।আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হানিফ মুন্সী ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্যামল চন্দ্র বসাক উপস্থিত থেকে টিফিন বক্স বিতরণ ও মিড-ডে মিল উদ্বোধন করেন।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অভিভাবক সমাবেশে বক্তৃতা করেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসার এ এইচ এম শাহরিয়ার রসুল, আশুগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শফিকুল ইসলাম, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি নারায়ন চন্দ্র ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক রুবি জাহান খন্দকার ও চরসোনারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক উম্মে রোমান প্রমুখ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্যামল চন্দ্র বসাক বলেন, শিক্ষার প্রধান ধাপ হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়। তাই এখান থেকে যেন কোন শিক্ষার্থী ঝরে না পড়ে এতে গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি বলেন, বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীরা দুপুরে খাবার খাওয়ার অজুহাতে বাড়িতে চলে যায়। কেউ কেউ ফিরে আসলেও অনেকে বিদ্যালয়ে ফেরত আসে না। আবার অনেকেই বিদ্যালয়ের বাইরে থেকে জাঙ্কফুড খেয়ে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই শিক্ষার্থীদের মাঝে টিফিন বাক্স বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। সেই সঙ্গে অভিভাবকদেরকে সচেতন করা হচ্ছে যাতে তাদের ছেলে-মেয়েদেরকে দুপুরের খাবার পাঠান। পর্যায়ক্রমে উপজেলার সকল স্কুলে এ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আশা করা যায় এতে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শতভাগ উপস্থিতি নিশ্চিত হবে।
এদিকে নতুন টিফিন বক্স হাতে পেয়ে খুশি বিদ্যালয়ের ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। উদ্বোধনী দিনে টিফিন বক্সের সাথে ছিল রান্না করা সুস্বাদু খিচুড়িও। নতুন টিফিন বক্সে খিচুড়ির সুঘ্রাণে মোহিত করে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের।এখন থেকে বিদ্যালয়ে বসে মায়ের হাতের রান্না করা খাবার খাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। মায়ের হাতের রান্না খেয়ে বাচ্চারা প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগান পাবে। পাশাপাশি দুপুরের খাবারের চাহিদা মিটিয়ে এসব কোমলমতি শিশুরা লেখাপড়ায় মনোযোগি হবে-এমনটাই প্রত্যাশা করছেন অনুষ্ঠানের অতিথি, শিক্ষক ও অভিভাবকরা।