ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামল চালিয়ে তার স্ত্রীকে রক্তাক্ত জখম করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। গুরুত্বর আহত গৃহবধূ আকলিমাকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজ্ঞ সিনিয়ার জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ব্যবসায়ী মো: মন মিয়া বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার সন্ধায় উপজেলার তালশহর ইউনিয়নের মৈশার গ্রামে ব্যবসায়ী মন মিয়ার বাড়িতে।
মামলার আসামীরা হলেন-বিজয়নগর উপজেলার ক্ষুদে হাড়িয়া গ্রামের সহিদ মিয়ার ছেলে কাশেম,আশুগঞ্জ উপজেলার মৈশার গ্রামের মৃত মুছা মিয়ার ছেলে আলমগীর,মৃত দুধ মিয়ার ছেলে এমরান ও সজ্ঞ মিয়ার ছেলে আজিজ। মামলার বিবরণ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, ব্যবসায়ী মন মিয়া উপজেলার মৈশার গ্রামের মৃত দুধ মিয়ার ছেলে এমরান ও জনৈক সাধন মিয়ার নিকট হইতে সরাইল থানার কালিকচ্ছের সিয়াম ব্রিকস ফিল্ড থেকে ২ একর জায়গা খরিদ করেন। এই ২ একর জায়গার মধ্যে এক একর জায়গা বাদিকে সাফকাওলা দলিল করে দেয়। মন মিয়া তার ক্রযকৃত বাকি জায়গা দলিল করে দেয়ার জন্য চাপ দিলে প্রতিপক্ষের লোকজন জমি দলিল করে না দেয়ার জন্য বিভিন্ন তালবাহানা করতে থাকে।এক পর্যায়ে অবশিষ্ট জায়গা যাতে দলিল করে দিতে না হয় সে কারনে বিজয়নগর থানার ক্ষুদে হরিয়া গ্রামের সহিদ মিয়ার ছেলে কাশেম এর মাধ্যমে ব্যবসায়ী মন মিয়ার বিরুদ্বে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
এই মামলায় মন মিয়া আদালতে আত্ব সমর্থন করলে আদালত থাকে জেলহাজতে পাঠান। উক্ত মামলায় মন মিয়া ১৮দিন হাজতবাস শেষে জামিনে বের হয়ে আসার পর তাকে ও তার পরিবারকে প্রতিপক্ষের লোকজন বিভিন্ন ভাবে হুমকি ও হামলা করার জন্য সময় সুযোগ খুঁজতে থাকে। গত বুধবার সন্ধ্যায় মামলার বাদি মন মিয়া নিজ বাড়িতে আছে মনে করে প্রতিপক্ষের লোকজন বাদিকে খুন করার উদ্দেশ্যে ভারী লোহার রড,ধারালো চাপাতি,ছুরি,চাকু ইত্যাদি অস্ত্র সস্ত্র সহ মন মিয়ার বাড়িতে প্রবেশ করে তাকে ডাকাডাকি করিতে থাকে।এক পর্যায়ে তার স্ত্রী আকলিমা বেগম ঘরের দরজা খোলা মাত্র প্রতিপক্ষের ৪/৫জন লোক জোরপূর্বক মন মিয়ার বসত ঘরে প্রবেশ করিয়া মন মিয়াকে খোঁজাখুঁজি করেন।পরে তাকে না পেয়ে তার স্ত্রীর কাছ থেকে জোড় পূর্বক ঘরের ষ্টিলের আলমারীর চাবি নিয়ে নগদ টাকা ও স্বণলংকার নেয়ার চেষ্টা করলে আকলিমা এতে বাধা দেয়।এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কাসেম,এমরান,আজিজ ও আলমগীর তাহার হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে মন মিয়ার স্ত্রী আকলিমার উপর হামলা করে রক্তাক্ত জখম করে।এসময় হামলাকারীরা আলমারীতে রাখা নগদ পাঁচ লাখ টাকা ও ৬ ভরি স্বর্ণালংকারসহ মোট ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়া যায়।
খবর পেয়ে ব্যবসায়ী মন মিয়া তার স্ত্রী আকলিমাকে আশংকাজনক অবস্থায় উদ্বার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে আকলিমা বেগম জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এব্যাপারে মামলার বাদি ব্যবসায়ী মন মিয়া জানান ইট ভাটার জন্য খরিদ করার একর জমি দলিল করে না দেয়ার জন্য আমাকে হত্যার হুমকিসহ নানান ভাবে হয়রানী করা হচ্ছে।এরই অংশ হিসাবে আমার বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। তিনি উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ন্যায় বিচার দাবী করেন। এব্যাপারে থানার পরিদর্শক তদন্ত সুজন চন্দ্র পাল জানান উভয় পক্ষের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। ব্যবসায়ী মন মিয়ার বাড়িতে হামলার বিষয়ে আদালতের একটি মামলা তদন্তাধীন রয়েছে।